মামা যেহেতু ওয়েটারকে মামা ডাকছে তাহলে তো আমার নানা হবে, কিন্তু নানার বয়স অনেক কম, মামার অর্ধেক হবে। ধুর ! কিন্তু মামার ডাকে চারপাশের সব নানারা ছুটে আসছে। এখানে তেমন কেউ আসে না, সবাই বাসায় বসে অর্ডার দেয়। তাই এই অবস্থা। পুরো রেষ্টুরেন্টে আমরা ছাড়া আর কেউ নেই। নানাদের মধ্যে একজন আমাদের টেবিলে হাজির।
রেঃ স্যার কিভাবে সাহায্য করতে পারি?
% আমাদেরকে একটি ব্লু পিজ্জা দিয়ে সাহায্য করুন।
* হি হি, আচ্ছা আপনাদের ছক্কা অফারটি আছে না?
রেঃ জ্বী ম্যাডাম, আছে।
মামা স্যার আর আপু ম্যাডাম !!
* আর আপনাদের ব্লু পিজ্জার জন্য আমরা কত পয়েন্ট পাব?
রেঃ ম্যাডাম, আপনি জানেন না ??? এটা আমাদের নতুন আইটেম তো, রেষ্টুরেন্টে এসে কেউ অর্ডার করলে একটা ব্লু পিজ্জার জন্যই পাবে ১০০ পয়েন্ট আর বাসায় অর্ডার করলে ৫০ পয়েন্ট!
* তার মানে ব্লু পিজ্জা অর্ডার করলেই আমরা ছক্কা অফারটি পাব?
রেঃ জ্বী ম্যাডাম।
* ইয়ে!! মামা, আজ তো মনে হয় আমাদের লাকি ডে। অনেকগুলো সুখবর পাচ্ছি!
% তাহলে আমাদেরকে একটা ব্লু পিজ্জা দিয়ে দেন।
আপু তার মেম্বারশিপ কার্ড বের করে দিল, সেখানে এই পয়েন্ট যোগ হবে আর মামা টিপটপ থেকে পেমেন্ট করে দিল।
# আচ্ছা মামা, তোমরা দুই জন তো স্যার আর ম্যাডাম হয়ে গেলে। আর ঐ ওয়েটার তো আমার নানা হয়।
% হা হা হা..! কিভাবে কি ?
# মামার মামা তো নানাই তাই না …
% আরে বোকা এটা তো এমনি সম্বোধন করছি, সে কি আসলেই আমার মামা নাকি ???
# কিন্তু তোমরা তো স্যার, ম্যাডাম হি হি…
* দেখ মামা, কি শুরু করল!
% আরে এটাও সম্বোধন। স্যার অর্থ হল জনাব, তেমনি ভদ্র মহিলাদের ম্যাডাম বলে সম্বোধন করতে হয়।
# মানে কি ? আমরা যে স্কুলে স্যার, ম্যাডাম বলি?
% এটা সন্মান দিয়ে বলি, যদিও আমাদের বলা উচিত শিক্ষক, গুরু, ওস্তাদ বা টিচার। কিন্তু আমরা স্যার, ম্যাডাম বলে অভ্যস্থ হয়ে গেছি। তাই এই অবস্থা !
একটু পরেই আমাদের সামনে চলে আসলো ইয়ামী ব্লু পিজ্জা।
# মামা, এখানে ছয়টি স্লাইস আছে। তার মানে সবাই ২ টি করে পাবে। কিন্তু মামা এটা তো অনেক মজার, আরও একটা হলে ভাল হত।
* মামা, ছক্কা অফারে এটা ট্রাই করতে হবে ।
% হুম আগে এটা তাড়াতাড়ি শেষ কর, পরেরটা পরে দেখা যাবে।
১০ মিনিটে আমাদের পিজ্জা খাওয়া শেষ এখন আমরা পরবর্তী পিজ্জার জন্য অপেক্ষা করছি।
* মামা, চল এখন ছক্কা অফারের কি করা যায় দেখি।
% চল, কাউন্টারে যাই।
রে ম্যাঃ স্যার কিভাবে সাহায্য করতে পারি ?
* আমরা ছক্কা অফারের ব্যাপারে কথা বলতে চাই।
রে ম্যাঃ জ্বী ম্যাডাম, আপনার কি ১০০ পয়েন্ট হয়েছে ?
# জ্বী আজ আমরা ব্লু পিজ্জা খেয়েছি।
রে ম্যাঃ তাহলে তো আজকেই আপনারা ১০০ পয়েন্ট পেয়েছেন। তাহলে আপনারা ১০০ দিয়ে খেলতে চান, নাকি ৫০০ পয়েন্টর জন্য জমাবেন?
* পার্থক্য কি ?
রে ম্যাঃ ৫০০ পয়েন্ট দিয়ে খেললে আপনারা ছক্কাতে যে সংখ্যা উঠবে সেখান থেকে পরের সবগুলো আপনি পাবেন। আর ১০০ পয়েন্ট দিয়ে খেললে যে সংখ্যা উঠবে শুধু সেটা পাবেন।
* না, কবে ৫০০ হবে তার ঠিক নাই। আমরা আজই খেলব।
# আপু আমার কিন্তু ব্লু পিজ্জা চাই ই চাই।
* এখানে কি কি খাবার থাকবে ?
রে ম্যাঃ আমাদের এখানে পাওয়া যায় এমন যেকোনো ছয়টি খাবার থাকতে পারে।
# আচ্ছা যদি ছয়টিতেই ব্লু পিজ্জা দেই তাহলে ?
রে ম্যাঃ না স্যার তা করা যাবে না। ছয়টি আলাদা খাবার হতে হবে।
* মামা কি করব এখন ?
% কোন চিন্তা করিস না, মুবি আপার সাথে কত লুডু খেলেছি! এটা কোন ব্যাপার?!
# মুবি আপা আবার কে?
% কেন তোদের আম্মু!!!
* কিন্তু আম্মুর নাম তো রুমি!
% ঐ মুবি থেকে রুমি হয়ে গেছে। কেন তোরা তোদের আম্মুর পুরো নাম জানিস না ??
# না, আম্মুর নাম তো রুমিনা ইফতেখার, সেটাই তো জানি।
মামার মনটা কেনো জানি হঠাৎ খারাপ হয়ে গেল।
% আপার নাম হল; মোবাশ্বেরা, আমরা মুবি আপা বলতাম, আর তোরা এই নামই জানিস না।
মামা বিড়বিড় করে কি যেন বলছে। কানে যা আসলো, কিভাবে একটি মেয়ে নিজের সবকিছু হারিয়ে একজন মা হয়ে উঠে।
* মামা এখন আমরা কি করব ?
% ও তাই তো, চল আমরা আমাদের ৪ নাম্বার এলগরিদমটা ঠিক করে ফেলি।
* কি থাকবে সেখানে ?
% কত নাম্বারে কি থাকবে সেটা।
# কিন্তু মামা, আমরা যদি ব্লু পিজ্জা না পাই??
% আরে যেন পাই তাই তো প্ল্যান করতে হবে। আরে আমি মারব, চিন্তা করিস না। জীবনে কত ছক্কা মেরেছি, এটা কোন ব্যাপার ! তবে ১/২ উঠাতে না পেরে অনেকবার হেরে গেছি। শেষের দিকে ভালো ভালো খাবার দেয়া আর ছয় নাম্বারে ব্লু পিজ্জা। তাহলে আমাদের এলগরিদম হবে-
এরপর মামা স্কেচবুকে প্ল্যান করা শুরু করল।
এলগরিদম ৪
ছক্কার সংখ্যা ১ হলেঃ
আমরা লাচ্ছি খাব
ছক্কার সংখ্যা ২ হলেঃ
আমরা শর্মা খাব
ছক্কার সংখ্যা ৩ হলেঃ
আমরা সিজলিং খাব
ছক্কার সংখ্যা ৪ হলেঃ
আমরা বার্গার খাব
ছক্কার সংখ্যা ৫ হলেঃ
আমরা ফ্রাইড চিকেন স্লাইস খাব
ছক্কার সংখ্যা ৬ হলেঃ
আমরা ব্লু পিজ্জা খাব
* মামা, এখানে একটু ঝামেলা আছে। আমার মনে হয় এটা ৫০০ পয়েন্টের জন্য ঠিক আছে। ১০০ পয়েন্টের জন্য হলে আমাদের যেকোনো একটা পেয়ে থেমে যেতে হবে সেটা এলগরিদমে থাকা উচিত।
# মামা, যদি সাদা দাগের বাইরে পড়ে তাহলে আমরা কি পাব সেটাও রাখা উচিত।
% ওকে, তাহলে আমাদের এলগরিদম হবে-
এলগরিদম ৪.১
ছক্কার সংখ্যা ১ হলেঃ
আমরা লাচ্ছি খাব।
ধন্যবাদ, আজ আর নয়।
ছক্কার সংখ্যা ২ হলেঃ
আমরা শর্মা খাব।
ধন্যবাদ, আজ আর নয়।
ছক্কার সংখ্যা ৩ হলেঃ
আমরা সিজলিং খাব।
ধন্যবাদ, আজ আর নয়।
ছক্কার সংখ্যা ৪ হলেঃ
আমরা বার্গার খাব
ধন্যবাদ, আজ আর নয়।
ছক্কার সংখ্যা ৫ হলেঃ
আমরা ফ্রাইড চিকেন স্লাইস খাব
ধন্যবাদ, আজ আর নয়।
ছক্কার সংখ্যা ৬ হলেঃ
আমরা ব্লু পিজ্জা খাব
ধন্যবাদ, আজ আর নয়।
আর ছক্কা বাইরে চলে গেলে
আমরা ফ্রেন্স ফ্রাই খাব
* এখন ঠিক আছে। কিন্তু মামা সাবধানে মারতে হবে। তোমার উপর আমাদের সব নির্ভর করছে।
% কথা শুনে মনে হচ্ছে, কত দিন খাস না ।
* হা হা মামা কি যে বল।
% ম্যানেজার সাহেব দেন ছক্কাটি কোথায় মারতে হবে বলুন।
রে ম্যাঃ এই যে নিন, দয়া করে আপনার কার্ডটি আমাদের দিন।
* এই যে কার্ড।
রে ম্যাঃ দুঃখিত স্যার, কার্ড ম্যাডামের হলে তো ম্যাডামকে মারতে হবে। এটা আমাদের নিয়মের মধ্যে আছে।
ম্যানেজারের কথা শুনে তো আপুর অবস্থা খারাপ, মনে হচ্ছে ঘামছে।
% আরে এটা কোনো ব্যাপার! এদিকে আয় তোকে কিছু টিপস দেই। শোন ছক্কা তে পাঁচের বিপরীতে ছয় থাকে, তিনের বিপরীতে চার আর একের বিপরীতে দুই। তাহলে আমরা যদি পাঁচ উপরে রেখে এমনভাবে ছক্কাটি মারি যেন এটা ঘুরে ঠিক উল্টে যায় তাহলেই ছক্কা। নে এখানে কয়েকবার চেষ্টা করে দেখ হয় কিনা। তুই পারবি, ভয় পাস না।
আপু ৪/৫ বার মারার পর প্রতিবারই ছক্কা উঠছে। আপু বিষয়টা শিখে ফেলেছে। এখন আর ভয় পাচ্ছে না।
* মামা, এটা কোন ব্যাপার। দেখ আমি কি করি…!
% তাহলে আমরা কি রেডি ??
* জ্বী মামা।
% ম্যানেজার সাহেব বোর্ড দেন আমরা প্রস্তুত।
রে ম্যাঃ স্যার এই যে বোর্ড।
আপু মনে হয় মনে মনে দোয়া পড়ছে। ছক্কা হাতে নিয়ে ভিতরে আঙুল দিয়ে রেখেছে যেন না নড়ে যায়। আমি আর মামা আপুর দিয়ে তাকিয়ে আছি। আপু কয়েকবার নিশ্বাস নিয়ে হাত ঘুরিয়ে বোর্ডে ছক্কাটি ফেলল। সবাই এখন আমরা ছক্কার দিকে তাকিয়ে আছি। তিন, ছয়, চার, পাঁচ… ঘুরছে। আর আসতে আসতে গতি কমে আসছে। পাঁচ… চার,… আর একটু ঘুরে ছয়তে এসে থেমে গেল।
# হুররে, আমরা আবার ব্লু পিজ্জা খাব।
* ইয়ে… মামা দেখেছ। এটা ছক্কা, বুঝলে আমি মেরেছি।
# হুম আর মামা শিখিয়ে দিয়েছে। হি হি…
% আরে থাম তোরা, হাতে সময় নেই, এটা বাসায় নিয়ে যাই।
# ঠিক আছে মামা, কিন্তু এর ২ টুকরা আমার।
% ঠিক আছে আর আমার ২ টুকরা আপার জন্য।
* না মামা, আমার একটা আর তোমার একটা আম্মুর জন্য। আমরা একটা করে খাব আর ইমু ২ টা খাবে, কি ঠিক আছে ইমু??
# না ঠিক নাই, আমিও আম্মুকে একটা দিব।
% হা হা হা, দেখা যাবে কে কয়টা দেয়, আর তোর আম্মু কয়টা খায় সেটা বাসায় গেলে দেখা যাবে। চল এখন বের হই।
মামা অটোকার ডাকলো। মুহূর্তের মধ্যে আমাদের সামনে হাজির হয়ে গেল একটি অটোকার। অটোকার যখন ফাঁকা থাকে তখন এর রঙ থাকে লাল, আর যাত্রী থাকলে সাদা। আমরা উঠতেই লাল গাড়িটি সাদা হয়ে গেল। মামা হঠাৎ কি নিয়ে যেন চিন্তা করছিল।
% এই ইমি, আমার আসার উদ্দেশ্য ছিল তোকে প্রোগ্রামিং শিখানো, এখনো তো শুরু করতে পারলাম না।
* কি যে বল মামা, আমার তো মনে হয় অনেক কিছু শিকে ফেলিছি। আগে বই পড়ে অনেক কিছু বুঝতাম না, এখন বুঝি। তার মানে এখন আমি আগের থেকে বেশি প্রোগ্রামিং পাড়ি।
% হা হা হা, তাই নাকি? শোন তোদের আব্বু আসবে। তখন বেশি সময় পাওয়া যাবে না। তাই তার আগেই সব শেষ করে ফেলতে হবে।
*কিন্তু মামা, এখনো তো অনেক বাকি!
% সেটা আমি জানি, তোর কাজ হল বাসায় গিয়ে আমরা গত দুদিনে আমরা যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করলাম তা সন্ধ্যায় আমি তোকে জিজ্ঞাস করব। ঠিক আছে ???
* কি কি ?
% এই ধর, আম, জাম কিভাবে রাখতে হয় তারপর আজ আমরা যেসব প্ল্যান করলাম, মানে এলগরিদম তৈরি করলাম। এই সব আরকি ।
* এটা কোন ব্যাপার! এখনই জিজ্ঞাস কর-
% না , এখন না। সন্ধ্যার আগে কোন পড়াশোনা হবে না ।
# মামা, আমার মাথা মনে হয় আগের থেকে একটু বেশি জোরে ঘুরছে।
% কেন, তোর আবার কি হল?? নতুন কোন প্রশ্ন?
# ঠিক তাই, অনেক অনেক প্রশ্ন জমে গেছে। কিন্তু তোমার সাথে করা বলার সময় পাচ্ছি না।
% ও, তাই নাকি ??? হাহাহা ঠিক আছে তাহলে আজ সারা বিকাল আমি তোর সব প্রশ্নের উত্তর দিব। তুই স্কেচবুকে লিস্ট করতে থাক।
# মামা বিকাল তো অনেক দেরি। আমি তো আর চেপে রাখতে পারছি না।
% ওরে বাপরে, তাই নাকি। তাহলে একটা একটা করে মাথা থেকে বের করা শুরু কর। দেখি কি ঘুরে তোর মাথার ভিতরে।
* হি হি মামা, ওর মাথার ভিতরে কিছু থাকলে তো ঘুরবে।
% আহা, আবার শুরু করলি। তুই তোর কাজ কর, এদিকে খেয়াল করতে হবে না । আর ইমু, বল কি ঘুরে, একটা একটা করে শুরু কর।
# মামা, আমরা তো জানি পরিবেশের ক্ষতি হয় এজন্য এসি নিষদ্ধ করা হয়েছে।
% হুম জানি তো, তাও প্রায় ৪ বছর হতে চলল। এসি বা রেফ্রিজারেটর তৈরি করার সময় সিএফসি CFCs (chlorofluorocarbons) ব্যবহার করা হয়। আর এই গ্যাস ওজোন স্তরের ক্ষতি করে
# মামা, এই ওজোন স্তর কি ?
% এটা হল বাতাসের একটি স্তর, যা সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি আমাদের পৃথিবীতে আসতে বাধা দেয়। আর এই CFC ওজোন স্তরের ক্ষতি করে। তাই পৃথিবীকে বাচিয়ে রাখার জন্য আমরা অনেক কাজ করছি তার মধ্যে অন্যতম হল CFC গ্যাসের ব্যবহার বন্ধ করা।
# কিন্তু মামা, আমার তো মনে হয় এই অটোকারে গোপনে এসি ব্যবহার করা হচ্ছে!
% তাই নাকি? কিভাবে বুঝলি?
# মামা, এখনও তুমি বুঝতে পার নাই? বাইরে থেকে গাড়ির ভিতরে ঠান্ডা।
% হা হা হা,এইকথা? এটা তো সংকুচিত বাতাস। বাইরের বাতাসকে সংকুচিত করে গাড়ির ভিতরে প্রবাহ করা হচ্ছে।
# কিন্তু মামা বাইরের বাতাস তো গরম!
% গরম কিন্তু গাড়ি চলার সময় বাইরের বাতাসকে গাড়ির ভিতরে রাখা সিলিন্ডারে ঢুকানো হয়। যেহেতু প্রবল চাপে ঢুকে তাই বাতাস সংকুচিত হয়ে সিলিন্ডারে ভিতরে থাকে।
# তাহলে তো মামা, সেটা গ্যাস না হয়ে তরল হয়ে যাবার কথা।
% না তার জন্য আরো চাপ প্রয়োজন, এটা গ্যাসই থাকে কিন্তু সব সময় প্রসারিত হতে চায়।
# কিন্তু এটা ঠান্ডা করবে কি করে ???
% হা হা হা। এটাই তো জাদু । যখন বাতাস প্রসারিত হতে চাইবে তার জন্য তার শক্তি দরকার, আর এই শক্তি হল তাপ। আর এই তাপ নেয় সে পরিবেশ থেকে। আর তাই আমাদের আশেপাশের তাপ কমতে থাকে আর আমরা ঠান্ডা অনুভব করি।
# না মামা, এত সহজ হবার কথা না, আরও ঝামেলা আছে-
% কোন ঝামেলা নাই। তুই এক কাজ কর। মুখের কাছে হাত নিয়ে জোরে ফু দে, এটা কি ঠান্ডা না গরম ?
# মামা, কি যে বল?? এটা গরম হবে কেন ??? ফু দিয়ে ঠান্ডা করে পিজ্জা খেয়ে আসলাম মাত্র!
% হা হা, ও তাই তো ! আচ্ছা এখন ফু না দিয়ে হা করে জোরে মুখ দিয়ে বাতাস বের কর।
# হা।
% এটা কি ??
# মামা, এটা তো গরম, কিন্তু কিভাবে সম্ভব?? পেটের ভিতরে আগুন লেগে গেল নাকি ???
% আরে না তুই মনে হয় ঠান্ডা না করেই পিজ্জা খেয়ে ফেলিছিস, হা হা হা…
# মামা, এখন কি হবে ??
% বেশি বেশি ফু দিতে থাক।
# ফু ফু । হা………। মামা, এখন ও তো গরম।
আমি কি করছি তা দেখে আপু অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইল। এরপর আপুও ফু ফু …। হা… করে ঘটনাটা বুঝার চেষ্টা করল।
* মামা, ঘটনা কি?? আমার টাও তো গরম।
% ঘটনা তেমন কিছু না, ফু দেয়ার সময় বাতাস সঙ্কুচিত হয়ে বের হয় তাই ঠান্ডা।
# মামা, এবার বুঝেছি। বাতাস ভিতর থেকে গরমই বের হয়। কিন্তু ফু দেয়ার সময় সঙ্কুচিত হয়ে ঠান্ডা হয়ে যায়। এরপর আমরা ফু …। হা… করতে করতে বাসায় পৌঁছে গেলাম।
গাড়ি থেকে নেমে এক দৌড়ে পিজ্জা নিয়ে আম্মুর কাছে চলে গেলাম। আমাদের তিনজনের থেকে তিনটি পিজ্জা আম্মুর জন্য হলেও অনেক জোর করে একটির বেশি খাওয়াতে পারলাম না। বাকি দুইটিও আমাকেই খেতে হল। এত পিজ্জা খাওয়ার ফলে আজ আর দুপুরে আর অন্য কিছু খেতে হল না। এরপর সন্ধ্যা পর্যন্ত নানা বিষয় নিয়ে মামার সাথে গল্প করলাম। আজ অনেকগুলো প্রশ্ন করলাম মামাকে। এখন মাথা ঘোরা আগের থেকে অনেক কমেছে। আমার প্রশ্নগুলো শুনে মামা প্রথমে হাসে, এরপর লিখে রাখে।
প্রশ্ন ১- আমাদের নাক কি করে বাতাস থেকে অক্সিজেন আলাদা করে গ্রহন করে ?
প্রশ্ন ২- শীতের পোশাক পড়লে যদি তাপ বের হতে না পারে, আর এই জন্য যদি আমাদের গরম লাগে। তাহলে তো গরমের দিনও শীতের পোশাক পড়লে ঠান্ডা লাগার কথা, যেহেতু বাইরের তাপ ভিতরে ঢুকতে পারবে না।
প্রশ্ন ৩- আমাদের মত পৃথিবীও কি তাপ উৎপন্ন করে?? তা না হলে পৃথিবী গরম হচ্ছে কেন?
হঠাৎ মামা, তার লেখা এক কবিতা পড়তে দিল।
% আমার লিখা এই কবিতাটি পড়। এবার ধরিত্রি দিবসে লিখেছে।
আমার পৃথিবী |
---|
আমার কলমটা হারালে মেজাজ খারাপ হয়, পছন্দের শার্টটি পরতে পরতে পুরাতন হলেও আবার পরতে মনে চায় ! সারা দিন কাজের পরও নিজের বাড়ির পানে ছুটে যাই আপন বিছানাতেই পরম শান্তি খুঁজে পাই। কিন্তু এই সমাজ, দেশ, এই পৃথিবীটাকে আপন করে নিতে পারলাম না! অনেক কিছু হারাই চোখে পড়ে না, পুরাতন হয় ঠিকই মনে ঠাই পায় না। জন্ম থেকে মৃত্যু পৃথিবীতে আছি, তাও খোঁজ নেই না তাই আজ কোথাও শান্তি পাই না। “ধরিত্রী দিবস” আসুন আপনকে খুঁজে নেই। আপনের মঙ্গল করি। |
কবিতা পড়ার পর আমি আরো কিছু প্রশ্ন যোগ করলাম-
প্রশ্ন ৪- ফ্যান ঘুরলে বাতাস লাগে কেন ?
প্রশ্ন ৫- কে বেশি শক্তিশালী, মানুষ নাকি কম্পিউটার ?
প্রশ্ন ৬- আচ্ছা পড়াশুনা করা কি খুব দরকার ?
প্রশ্ন ৭- শুনেছি আগে নাকি কবিরাজের পানি পড়া খেলে সুস্থ হয়ে যেত, আর এখন তো ঔষুধ খেলেও কাজ হয় না।
মামার সাথে গল্প করতে করতে প্রায় ৫টা বেজে গেল।আম্মু আমাদের নাস্তা খাওয়ার জন্য ডাকছে।
% তুই যা, আমার একটূ কাজ আছে। তোর সব প্রশ্নের উত্তর তুই পেয়ে যাবি। আর মনে আছে তো সন্ধ্যায় কিন্তু কাজ আছে।
# হুম মনে আছে । আজ আপুকে প্রোগ্রামিং শিখাবে-
% তুই কিন্তু আমার সহকারী, সময় মত চলে আসবি।
# ঠিক আছে। যাই এখন – আমার কিন্তু আরও অনেক প্রশ্ন আছে।
% আচ্ছা ঠিক আছে, সময় করে আবার তোর সাথে আড্ডা দিব। তোর থেকে প্রশ্ন করা শিখতে হবে আমাকে । হা হা হা…